লাইন ও লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষ ( ধান চাষে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি)
লাইন ও লোগো পদ্ধতি হলো ধান চাষের ক্ষেত্রে আধুনিক ও নতুন প্রযুক্তি যার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব উপায়ে ধানের ভালো ফলন পাওয়া যায়।
লাইন পদ্ধতিতে ধান চাষঃ লাইন বা সারি পদ্ধতিতে ধানের চারা রোপণের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব হতে হবে ২০-২৫ সেমি বা ৮-১০ ইঞ্চি। ধানের সারিতে গুছি থেকে গুছির দূরত্ব হতে হবে ১৫-২০ সেমি বা ৬-৮ ইঞ্চি।
লাইন বা সারি পদ্ধতিতে চারা লাগানোর সুবিধাসমুহঃ
- লাইন বা সারি করে চারা লাগালে গাছ পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো ও বাতাস পেয়ে থাকে। ফলে গাছের সালোকসংশ্লেষণে সুবিধা হয়।
- সহজেই গুটি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যায়।
- লাইন বা সারি করে চারা লাগালে ধান গাছের অান্তঃপরিচর্যা করতে সুবিধা হয়। অর্থাৎ নিড়ানি যন্ত্র ব্যবহার করে খুব সহজেই জমি আগাছামুক্ত করা যায় এবং খরচও কম হয়ে থাকে।
- এই পদ্ধতিতে সার প্রয়োগে সুবিধা হয়।
- লাইন বা সারি পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে জমিতে তুলনামুলকভাবে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়।
- এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে ফলন অনেক বৃদ্ধি পাবে।
লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষঃ
লোগো পদ্ধতিও ধান চাষের নতুন একটি প্রযুক্তি। ধানের চারা রোপণের সময় প্রতি ১০ সারির পরে একটি সারি বাদ দেওয়া বা ফাঁকা রাখাই হলো লোগো পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে প্রতি ১০ সারি পরে ১২-১৬ ইঞ্চি ফাঁকা রাখা উত্তম। ধানের চারা রোপণের সময় প্রতি ১০ সারির পরে ১ টি লাইনে ধানের চারা লাগানো বাদ রেখে অন্য লাইনে চারা লাগাতে হবে। এই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ জমিতে ধানের চারা রোপণ শেষ করতে হবে।
ধান চাষে লোগো পদ্ধতির সুবিধাসমুহঃ
বাদামী ঘাসফড়িং ও মাজরা পোকা ধান গাছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে। ছায়াযুক্ত স্থানে সাধারণত এ ধরনের পোকার আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হলে ধান গাছ পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস পাওয়ায় পোকার আক্রমণ কমে যায়। জমিতে এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে আগাছা দমন, সঠিকভাবে সার প্রয়োগ ইত্যাদি অান্তঃপরিচর্যা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তাছাড়া আগাছা পরিষ্কারের সময় লোগোর লাইনে বা সারিতে তা পুতেঁ রাখলে ভালো জৈব সার হয়। লোগো পদ্ধতির আরেকটি সুবিধা হলো লোগোযুক্ত জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ কম হয়ে থাকে।
পরিশেষে বলা যায় লোগো পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে লাইন কমে গেলেও ধানের ফলন বেড়ে যায়। সঠিকভাবে চাষ করলে ধানের ফলন বিঘা প্রতি ৫ মণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাছাড়া জমিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হলে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যাবে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ কমে যাবে এবং লাভ বেশি হবে।
লাইন ও লোগো পদ্ধতি ফসলের মাঠে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে ধানের প্রতি চারাতে গুছির সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং প্রতি গুছিতে সক্রিয় কুশির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। ফলে ধানের ফলন বিঘা প্রতি প্রায় ৫ মণ বেড়ে যাবে।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!
ফলন বৃদ্ধির যে তথ্য দেয়া হলো, তার রেফারেন্স কি?
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউড