About Us Contact Us Privacy Policy Terms & Conditions Copyright

গরু মোটাতাজাকরণ (Beef Fattening) পদ্ধতি। ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরি

Please don't forget to share this article

গরু মোটাতাজাকরণ বা বীফ ফ্যাটেনিং (Beef Fattening) বলতে কিছু সংখ্যক গরু বা বাড়ন্ত বাছুরকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এবং উন্নত সুষম খাবার সরবরাহ করে ঐ গরুর শরীরে অধিক পরিমাণ মাংস/চর্বি বৃদ্ধি করে বাজারজাত করাকেই বুঝায়। গরু মোটাতাজাকরণ প্রযুক্তি ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কারণ অল্প সময়ে অল্প পুঁজি দ্বারা এ পদ্ধতিতে বেকারত্ব দূরীকরণ অথবা মূল আয়ের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের এটি একটি চমৎকার মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাই গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন এবং একটি লাভজনক ব্যবসা। গরু মোটাতাজাকরণ মূলত- ৪ মাস মেয়াদি; ৬ মাস মেয়াদি; ১ বছর মেয়াদি হয়ে থাকে।

গরু মোটাতাজাকরন প্রক্রিয়ায় ধারাবহিকভাবে যে সকল বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে হব তা হলো-

০১. পশু নির্বাচন, ০২. কৃমিমুক্তকরণ, ০৩. টিকা প্রদান , ০৪. পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, ০৫. স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বাসস্থান, ০৬.দৈহিক ওজন নির্ণয় এবং ০৭. বাজারজাতকরণ।

০১। পশু নির্বাচন : মোটাতাজাকরণ  কর্মসূচীর জন্য গরু ক্রয়ের সময় প্রধান দুটি বিবেচ্য বিষয় হলো বয়স ও শারীরিক গঠন।

ক. বয়স নির্ধারন: মোটতাজা করার জন্য সাধারনত ২ থেকে ২.৫ বছরের গরু ক্রয় করা যেতে পারে, তবে ৩ বছরের গরু হলে ভালো।

 খ.শারীরিক গঠন : মোটাতাজাকরণে ব্যবহৃত গরুর দৈহিক গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশুদ্ধ জাতের গরু অপেক্ষা সংকর (CROSS) জাতের গরুর শারীরিক বৃদ্ধি তাড়াতাড়ি হয় বলে সংকর জাতের গরু নির্বাচন করা ভালো। তবে দেশীয় গরু মোটাতাজাকরণও লাভজনক। দুই-আড়াই (২-২.৫) বছরের গরুর শারীরিক বৃদ্ধি ও গঠন মোটাতাজাকরণের জন্য বেশি ভালো।এঁড়ে বাছুরের দৈহিক বৃদ্ধির হার বকনা বাছুরের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।বাছুরের শিরদাঁড়া সোজা, বুক চওড়া ও ভরাট, পেট চ্যাপ্টা ও বুকের সঙ্গে সমান্তরাল, মাথা ছোট ও কপাল প্রশস্ত, চোখ ভেজা ও উজ্জ্বল, পা খাটো প্রকৃতির ও হাড়ের জোড়াগুলো স্ফীত, পাঁজর প্রশস্ত ও বিস্তৃত হতে হবে। কালো ও গাঢ় লাল রঙের গরু বাছাই করতে হবে। এতে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যাবে। ঢিলে চামড়া বিশিষ্ট, পাতলা অথচ সুস্থ রোগহীন গরু বাছাই করতে হবে।

০২ কৃমিমুক্তকরণ  : রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ানদের নির্দেশনা মত কৃমির ঔষধ ব্যবহার করতে হবে। গরু সংগ্রহের পর পরই পালের সব গরুকে একসাথে কৃমিমুক্ত (বিশেষ করে গোল কৃমি ও কলিজা বা পাতা কৃমি) করা উচিত। তবে প্রতি ৭৫ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি করে ENDEX® বা LT-Vet® টাবলেট /এ্যালমেক্স ভেট,/ট্টাইলেভ ভেট অথবা প্রতি ১২০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি Tetranid® ব্যবহার করা যেতে পারে। কৃমি দূর করার পরে গরুকে ইউরিয়া মিশ্রিত উন্নত খাবার দিতে হবে।

০৩ টিকা প্রদান : পূর্ব থেকে টিকা না দেওয়া থাকলে খামারে আনার পরপরই সবগুলো গরুকে তড়কা, বাদলা এবং ক্ষুরা রোগের টিকা দিতে হবে। এ ব্যপারে নিকটস্থ পশু হাসপাতলে যোগাযোগ করতে হবে।

০৪। স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থাঃ বাসস্থানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি গরুর জন্য ৮ ফুট লম্বা এবং ২ মিটার প্রস্থ হিসেবে জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরের চালা যাতে গরম না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি ঘরের মেঝে একদিকে ঢালু করতে হবে যাতে গরুর মলমূত্র গড়িয়ে নালা দিয়ে সহজেই বের হতে পারে। এজন্য ঘরের পেছনে ১ হাত চওড়া এবং ৪ ইঞ্চি গভীর নর্দমা তৈরি করে রাখতে হবে। প্রতিদিন অন্তত দু’বার গরুর বাসস্থান পরিষ্কার করতে হবে।

০৫ পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ গরু মোটতাজাকরণে দুই ধরনের খাদ্যের সমন্বয়ে রেশন তৈরী করা হয়।

ক) আঁশ জাতীয়ঃ শুধু খড়, ইউ এম, সবুজ ঘাস ইত্যাদি । তবে এই প্রক্রিয়ায় খামারিদেরকে শুধু খড়ের পরিবর্তে ইউ এম এস খাওয়াতে হবে। কোন খামারি সবুজ ঘাস খাওয়াতে চাইলে প্রতি ১০০ কেজি কাঁচা  ঘাসের সাথে ৩ কেজি চিটাগুড়ে মিশিয়ে তা গরুতে খাওয়াতে পারেন। এক্ষেত্রে কাঁচা ঘাসও গরুকে পর্যাপ্ত পরিমানণ সরবরাহ করতে হবে। গরুকে তার ইচ্ছা অনুযায়ী, অর্থাৎ গরু যে পরিমাণ খেতে পারে সে পরিমান ইউ এম এস সরবারাহ করতে হবে।

খ) দানাদর মিশ্রণঃ খৈল, ভূষি, চাষের কুড়া , খুদ, শুটকি মাছ, ঝিনুকের গুড়া, লবণ ইত্যাদি দানাদার খাদ্য। নিম্নের ছক অনুযায়ী অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী খামারিগণ বিভিন্ন পরিমাণ মিশ্রণ তৈরী করে নিতে পারবেন।

১. নং মিশ্রণ
ক. তিলের খৈল = ৪ কেজি
খ. চালের কুঁড়া = ৪ কেজি
গ. গমের ভূষি = ৪ কেজি
ঘ. যে কোন ডালের ভূষি = ৪ কেজি

২নং মিশ্রণ
ক. গম ভাঙ্গা =৪কেজি
খ. তিলের খৈল = ৪ কেজি
গ. চালের কুঁড়া = ৪ কেজি
ঘ. ডাল ভাঙ্গা, খেসারি = ৪ কেজি

গরু মোটাতাজাকরণের সুষম খাদ্য তালিকা

নিচে তা দেওয়া হলো:

ক) শুকনো খড়: দুই বছরের গরুর জন্য দৈহিক ওজনের শতকরা ৩ ভাগ এবং এর অধিক বয়সের গরুর জন্য শতকরা ২ ভাগ শুকনো খড় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি করে কেটে একরাত লালীগুড়/চিটাগুড় মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে প্রতিদিন সরবরাহ করতে হবে। পানি: চিটাগুড় = ২০ : ১।
খ) কাঁচাঘাস: প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ কেজি তাজা ঘাস বা শস্যজাতীয় তাজা উদ্ভিদের উপজাত দ্রব্য যেমন- নেপিয়ার, পারা, জার্মান, দেশজ মাটি কালাই, খেসারি, দুর্বা ইত্যাদি সরবরাহ করতে হবে।
গ) দানাদার খাদ্য: প্রতিদিন কমপক্ষে ১ থেকে ২ কেজি দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।

নিচে ১০০ কেজি দানাদার খাদ্যে তালিকা দেওয়া হলো:

১. গম ভাঙা/গমের ভূসি-৪০ কেজি;
২. চালের কুঁড়া-২৩.৫ কেজি;
৩. খেসারি বা যেকোনো ডালের ভূসি-১৫ কেজি:
৪. তিলের খৈল/সরিষার খৈল-২০ কেজি; লবণ-১.৫ কেজি।
এছাড়াও আলাদা রকমের ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন- চিটাগুড় ৩৯ ভাগ, গমের ভূসি ২০ ভাগ, ধানের কুঁড়া ২০ ভাগ, ইউরিয়া ১০ ভাগ, চুন ৬ ভাগ ও ৫ ভাগ লবণের মিশ্রণ।

উল্লিখিত তালিকা ছাড়াও বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন মিনারেল মিশ্রণ (যেমন- Ranmix Total®), এন্টিবায়োটিক (যেমন- Oxysentin® ২০% @ ১গ্রাম/কেজি) ও বাজারে প্রচলিত খাবার সোডা, ১% হারে খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। তাছাড়া বিভিন্ন রকমের ইউরিয়া মোলাসেস ব্লকও ব্যবহার করা যেতে পারে।

গরুকে সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে মিশ্রিত উন্নত খাবার দিতে হবে-

১। আঁশ বা ছোবড়া জাতীয় জাতীয়-খাদ্যের সাথে মিশিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে

২। দানাদার জাতীয়-খাদ্যের সাথে সরাসরিভাবে এবং

৩। ইউরিয়া মোলাসেস ব্লকের মাধ্যমে ।

উল্লেখিত তিনটি পদ্ধতির মধ্যে খড়ের প্রক্রিয়াজাত করে ইউরিয়া খাওয়ানো সহজ, ব্যয় কম এবং ফল ভালো আসে।

ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরি পদ্ধতি
ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরিতে যেসব উপকরণ লাগে তা হলো- গমের ভুসি ৩ কেজি, ঝোলাগুড় ৬ কেজি, ইউরিয়া ৯০ গ্রাম, লবণ ৩৫ গ্রাম, ৫শ’ গ্রাম খাবার চুন এবং কাঠের ছাপ। এগুলো সংগ্রহ করে সামান্য ভিটামিন ও খনিজ লবণ মিশ্রণ একটি লোহার কড়াইতে চিটাগুড়সহ জ্বাল দিয়ে সামান্য ঘন করতে হবে। কড়াই চুলা থেকে নামিয়ে কড়াই এর মধ্যস্থ চিটাগুড়ে ইউরিয়া, চুন, লবণ, ভিটামিন ও খনিজ মিশ্রণ এবং ভুসি দিয়ে ভালো করে মেশাতে হবে। তারপর ছাঁচের মধ্যে কিছু ভুসি ছিটিয়ে মিশ্রিত দ্রব্যগুলো ভরে ব্লক তৈরি করতে হবে। ১টি গরুকে দৈনিক ৩শ’ গ্রাম ব্লক জিভ দিয়ে চেটে চেটে খেতে দিতে হবে অর্থাৎ ১টি ব্লক একটি গরুকে ৩ দিন খাওয়াতে হবে। প্রথমে ব্লক চাটতে না চাইলে ব্লকের ওপর সামান্য ভুসি ও লবণ ছিটিয়ে দিলে আস্তে আস্তে চাটার অভ্যাস হবে।

খড়ের সাথে মিশিয়ে ইউরিয়া খাওয়ানোর নিয়মঃ ১০ কেজি খড় (ইউ.এম.এস.) প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য ৫ লিটার পানি, চিড়াগুড় ২.৫ কেজি এবং ৩০০ গ্রাম ইউরিয়া পলিথিনের উপর বা পাকা মেঝের উপর স্তরে-স্তরে সাজিয়ে ভালভাবে উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে সমস্ত উপাদান মেশাতে হবে, যা একবারে বা সংরক্ষণ করে ২-৩ দিনের মাঝে খাইয়ে শেষ করতে হবে। গরুকে প্রথমে দৈনিক ৫ গ্রাম থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ গ্রাম ইউরিয়া খাওয়ানো যায়। ছোট গরুর ক্ষেত্রে ৩০-৪০ গ্রামের বেশী দৈনিক খাওয়ানো উচিত নয়। দানাদার খাদ্যে ইউরিয়া ব্যবহার করে বিভিন্ন দৈহিক ওজনের গবাদি পশুর দৈনিক খাদ্যের তালিকা নিন্মরুপ-

১০০ কেজি দৈহিক ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা-
ধানের খড় = ২ কেজি
সবুজ ঘাস = ২ কেজি (ঘাস না থাকলে খড় ব্যবহার করতে হবে
দানদার খাদ্যে মিশ্রন = ১.২-২.৫ কেজি
ইউরিয়া = ৩৫ গ্রাম (নিয়মানুযায়ী)
চিটাগুড়া = ২০০-৪০০ গ্রাম
লবণ = ২৫ গ্রাম
দানাদার খাদ্যের সাথে লবন, ইউরিয়া, চিটাগুড় এক সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার দিতে হবে। ধানের খড় এবং কাঁচা ঘাস ছোট ছোট করে কেটে এক সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

১৫০ কেজি ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা
খড় = ৩ কেজি
কাঁচা ঘাস = ৫-৬ কেজি
দানাদার খাদ্যের মিশ্রন = ১.৫-২ কেজি
চিটাগুড় = ৫০০ গ্রাম
ইউরিয়া = ৪৫ গ্রাম (নিয়মানুয়ায়ী)
লবন = ৩৫ গ্রাম

১৫০২০০ কেজি ওজনের পশুর খাদ্য তালিকা-
ধানের খড় = ৪ কেজি
কাঁচা ঘাস = ৫-৬ কেজি
দানাদার খাদ্যের মিশ্রন = ১.৫-২ কেজি
চিটাগুড় = ৫০০ গ্রাম
ইউরিয়া = ৪৫ গ্রাম (নিয়মানুযায়ী)
লবন = ৩৫ গ্রাম

মোটাতাজাকরণের গরুকে সর্বক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ জাতীয় খাবার (খড়, কাঁচা ঘাস) এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। গবাদিপশুকে ইউরিয়া প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রদানে কিছু কিছু সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত।১। এক বছরের নিচে গরুকে ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না।

২। কখনও মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না
৩। গর্ভাবস্থায় ইউরিয়া খাওয়ানো যাবে না।
৪। অসুস্থ গরুকে ইউরিয়া না খাওয়ানোই ভালো তবে, দূর্বল গরুকে পরিমাণের থাকে কম খাওয়ানোই ভালো।
৫। ইউরিয়া খাওয়ানোর প্রাথমিক অবস্থায় (৭ দিন পর্যন্ত গরুকে ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে বেঁধে রাখতে হবে। পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। গরু মোটাতাজাকরণের মেয়াদ তিন মাস, যা শুরু হবে ইউরিয়া মিশ্রিত খাবার প্রদানের দিন থেকে। এই খবার খাওয়ানো শুরু হওয়ার পর থাকে ১০-১৫ দিন পর হেমাটোপিন বিএস (১০এমএল) নামক একটি ইনজেকশন গরুর মাংসপেশীতে দিলে মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে।

খাওয়ানের পরিমাণঃ প্রতিটি গরুকে তার দেহের ওজন অনুপাতে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। গরুর ওজনের শতকরা ২-৩ ভাগ পরিমাণ খাবার (Dry Matter) সরবরাহ করলেই চলবে।

খাওয়ানোর সময়ঃ গরুকে দানাদার মিশ্রণটি এবারের না খাইয়ে ২ ভাগে ভাগ করে সকালে এবং বিকালে খাওয়াতে হবে।

পানিঃ প্রতিটি গরুকে পর্যান্ত পরিমানে পরিস্কার খাবার পানি সরবরাহ করতে হবে।

০৬. দৈহিক ওজন নির্ণয়ঃ মোটাতাজাকরণ  প্রক্রিয়ায় গরুকে দৈহিক ওজন নির্ণয় একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কেননা গরুর খাদ্য ,ঔষধ সরবরাহ ইত্যাদি কাজগুলো করতে হয় দৈহিক ওজনের উপর ভিত্তি করে। গরুর ওজন নির্নয়ের জন্য প্রথমে গরুকে সমান্তরাল জায়গায় দাড় করাতে হবে। তারপর ছবির নির্দেশিকা অনুসারে ফিতা দিয়ে দৈর্ঘ্য (L) ও বুকের বেড়ের (G) মাপ ইঞ্চিতে নিতে হবে। এই মাপ { L (ইঞ্চি) x G2(ইঞ্চি)} ÷ ৬৬০} = ওজন (কেজি) সূত্র অনুসারে বসালে গরুর ওজন পাওয়া যাবে। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যেই গরু মোটাতাজাকরণ করে বাজারজাত করা সম্ভব।

০৭. বাজারজাতকরণ : মোটাতাজাকরণ গরু লাভজনকভাবে সঠিক সময়ে ভালো মূল্যে বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে আরেকটি উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়। বাংলাদেশে বিক্রয়যোগ্য গবাদিপ্রাণির বাজার মূল্যেও মৌসুমভিত্তিক হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। কাজেই একজন প্রতিপালককে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য অবশ্যই গরুর ক্রয় মূল্য যখন কম থাকে তখন গরু ক্রয় করে বিক্রয় মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে বিক্রয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। সাধারণত কোরবানির ঈদের সময় গরুর মূল্য অত্যধিক থাকে এবং এর পরের মাসেই বাজার দর হ্রাস পায়। তাই এখন গরু  মোটাতাজাকরণের উপযুক্ত সময়। তবে গরু বিক্রির কমপক্ষে ২ সপ্তাহ আগে থেকে সব ধরনের ভিটামিন ও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। স্বল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়ার সহজ এবং সুবিধাজনক উপায়ের মধ্যে গরু মোটাতাজাকরণ একটি অত্যন্ত যুগোপযোগী পদ্ধতি। তাছাড়া বর্তমানে সারাবছরই মাংসের বাজার দর স্থিতিশীল থাকায় গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকলে লাভবান হওয়া যায়। স্থানীয় হাট-বাজার ও শহরে গরুর মাংসের চাহিদা খুব বেশি।

 

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article

4 thoughts on “গরু মোটাতাজাকরণ (Beef Fattening) পদ্ধতি। ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.agriculturelearning.com কর্তৃক সংরক্ষিত