ছাদ বাগান। ছাদ বাগান করার পদ্ধতি। ছাদ বাগানের পরিচর্যা
ছাদ বাগানের ধারণা অনেক আগের হলেও বাংলাদেশে বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বাড়ির ছাদে বাগান করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই বিভিন্ন ধরণের বাগান দেখা যায়। তবে এসব বাগানের অধিকাংশই গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বাড়ির ছাদে যেকোনো গাছ এমনকি শাকসবজিও ফলানো সম্ভব। ছাদে সফলভাবে বাগান করতে হলে জানতে হবে কোন গাছের জন্য কী ধরণের মাটি উপযোগী, বাশি গরম বা রোদ সহ্য করতে পারে এমন গাছ নির্বাচন করতে হবে। এছাড়াও বাগানে নিয়মিত পানি সেচ দেওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখাসহ অন্যান্য পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে হবে।
ছাদে বাগান করার প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- একটি খালি ছাদ;
- হাফ ড্রাম, সিমেন্ট বা মাটির টব, প্লাস্টিক ষ্ট্রে;
- ছাদের সুবিধামতো স্থানে স্থায়ী বেড ( ছাদ ও বেডে মাঝে ফাঁকা রাখতে হবে।);
- সিকেচার, কোদাল, কাচি, ঝরনা, বালতি, করাত, খুরপি, ছুরি, হাত স্প্রে মেশিন ইত্যাদি;
- বেলে দোঁআশ মাটি বা পাহাড়িয়া লাল মাটি,পচা শুকনা গোবর ও কম্পোষ্ট, বালু ও ইটের খোয়া ইত্যাদি;
- গাছের চারা / কলম বা বীজ ইত্যাদি।
ছাদ বাগান তৈরির জন্য উপযোগী গাছঃ
ছাদে বাগান করার সময় জরুরী বিষয় হলো লক্ষ রাখতে হবে যেন গাছটি বড় আকারের না হয়। ছোট আকারের গাছে যেন বেশি ফল ধরে সে জন্য হাইব্রিড জাতের গাছ বা কলমের গাছ লাগানো যেতে পারে। বেঁটে প্রজাতির অতিদ্রুত বর্ধনশীল ও ফল প্রদানকারী গাছই ছাদ বাগানের জন্য উত্তম। বীজের চারা নয়, কলমের চারা লাগালে অতিদ্রুত ফল পাওয়া যায়। ছাদ বাগানের জন্য হাইব্রিড জাতের গাছ লাগানোই উত্তম। নিম্নে চাষ উপযোগী কিছু গাছের নাম দেওয়া হলো-
ফল জাতীয়ঃ
- আমঃ বারি আম-৩ (আম্রপালি), বারি আম-৪, মল্লিকা, বাউ আম-২ (সিন্দুরী)।
- পেপে,আতা, শরিফা ,আঙ্গুর,বাতাবিলেবু, কুল, সফেদা, ছোট জাতের কলা, ছোট জাতের আনারস, কামরাঙ্গা, জলপাই ইত্যাদি।
- পেয়ারাঃ বারি পেয়ারা-২, ইপসা পেয়ারা-১।
- কুলঃ কুলের বিভিন্ন জাতের মধ্যে বাউ কুল-১, ইপসা কুল-১ (আপেল কুল), থাই কুল-২ উল্লেখযোগ্য।
- লেবুঃ লেবুর বিভিন্ন জাতের মধ্যে বারি লেবু -২ ও ৩, বাউ কাগজি লেবু-১ ইত্যাদি।
- আমড়াঃ বারি আমড়া-১, বাউ আমড়া-১।
- করমচাঃ থাই করমচা।
- ডালিম (দেশী উন্নত) জাতের।
- কমলা ও মাল্টাঃ কমলা ও মাল্টার মধ্যে রয়েছে বারি কমলা-১, বারি মাল্টা – ১ ।
- জামরুলঃ বাউ জামরুল-১ (নাশপাতি জামরুল), বাউ জামরুল-২ (আপেল জামরুল) ইত্যাদি।
শাকসবজি জাতীয়ঃ লালশাক, পালংশাক, মুলাশাক, ডাটাশাক, কলমীশাক, পুইঁশাক, লেটুস, বেগুন, টমেটো, ঢেঁড়স, চুকুর, ক্যাপসিকাম, শিম, বরবটি, শসা, করলা, পটোল, লাউ, ধুন্দল, বারোমাসী সজিনা, ব্রোকলি, মুলা ইত্যাদি।
মসলা জাতীয়ঃ মরিচ, ধনেপাতা, বিলাতি ধনিয়া, পুদিনা, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গোলমরিচ, পাম ইত্যাদি।
ঔষধিগুণ বিশিষ্টঃ অ্যালোভেরা, তুলসী, থানকুনি, চিরতা, স্টিভিয়া, গাইনোরা ইত্যাদি।
ফুল জাতীয় : গোলাপ, বেলী, টগর, জুঁই, গন্ধরাজ, জবা, টিকোমা, জারবেরা, শিউলি, এলামন্ডা, বাগান বিলাস ও বিভিন্ন মৌসুমি ফুল।
সার মাটি প্রাস্তুতকরণঃ প্রথমে দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ মাটি সংগ্রহ করতে হবে।তারপর মাটি শোধন করে নিতে হবে। শোধন করার জন্য পরিমাণমতো মাটি নিয়ে তাতে ফরমালডিহাইড ( ১০০ মিলি/লিটার পানি ) মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে পুরো মাটিকে মোটা পলিথিন দিয়ে ৩-৪ দিন ঢেকে রাখতে হবে। পরে পলিথিন উঠিয়েও ৩-৪ দিন সূর্যের আলোতে মাটি খোলা রাখতে হবে। ফরমালিনের দন্ধ শেষ হয়ে গেলে সম পরিমান গোবর বা জৈব সার , প্রয়োজনে রাসায়নিক সার মিশিয়ে তৈরি করতে হবে সার মাটি।
ছাদে বাগান করার পদ্ধতিঃ
টব পদ্ধতি : খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা যায় বলে এটাই সহজ পদ্ধতি বলে বিবেচিত। তবে ফলের গাছের জন্যে টব সাধারণত যে আকারের হয়ে থাকে তাতে খুব একটা ভালো হবে না। বড় আকারের টবে ফলের গাছ লাগানো যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সিমেন্টের তৈরি বড় টব ব্যবহার করা যায়। টবে চাষ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জৈব সার ব্যবহার করা উচিত। ১৪ ইঞ্চি থেকে ১৮ ইঞ্চি আকারের একটি টবের জন্য জৈব সারের পাশাপাশি ১০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৫০ গ্রাম এমওপি সার উত্তমরূপে মিশিয়ে ১০ – ১২ দিন রেখে দিতে হবে। তারপর টব ভরাট করতে হবে।
হাফড্রাম পদ্ধতি : বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই হাফড্রাম পদ্ধতিতে ছাদে ফলের বাগান করে থাকেন। হাফড্রামের তলদেশে ছিদ্র করতে হবে। ছিদ্রগুলোয় ইটের টুকরো বসাতে হবে; তার উপরে ড্রামের তলদেশে প্রথম ১ ইঞ্চি পরিমাণ খোয়া বা সুড়কি দিতে হবে এবং তার উপরে এক ইঞ্চি পরিমাণ জৈব সার বা পচা গোবর দিতে হবে। এর ফলে অতিরিক্ত পানি সহজেই বের হয়ে যেতে পারবে। জৈব সারের পাশাপাশি প্রতিটি ড্রামে ২০০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম এমওপি ব্যবহার করা যেতে পারে। আম ও লেবু জাতীয় গাছের জন্য প্রতিটি ড্রামে উপরিউক্ত জৈব ও রাসায়নিক সারের পাশাপাশি ৫০০ গ্রাম হাড়ের গুড়া ব্যবহার করা যেতে পারে। শাক-সবজি, ফুলের জন্য ছোট খাট টব বা পাত্র হলেও চলে। কিন্তু ফলের ক্ষেত্রে পাত্র/ড্রাম যত বড় হয় তত ভালো।
স্থায়ী বেড পদ্ধতি : ছাদে বাগান করার জন্য স্থায়ী বেড পদ্ধতি একটি আধুনিক পদ্ধতি। স্থায়ী বেড পদ্ধতিতে ছাদে বাগান করার পূর্বে ছাদ বিশেষভাবে ঢালাই দিয়ে নেট ফিনিশিং করে নিতে হবে। এর ২ টি পদ্ধতি আছে। যথাঃ
ছাদের চারদিকে স্থায়ী বেড পদ্ধতিঃ এ পদ্ধতিতে বাগান করার জন্য ছাদের চারিদিকে ২ ফুট প্রস্থের দুই পাশে ১.৫ ফুট উঁচু দেয়াল ৩ ইঞ্চি গাঁথুনির নেট ফিনিশিং ঢালাই দিয়ে তৈরি করলে মাঝখানে যে খালি জায়গা তৈরি হয়, সেই খালি জায়গার তলায় প্রথমে এক ইঞ্চি ইটের সুড়কি বা খোয়া, পরের এক ইঞ্চি গোবর সার দেয়ার পর বাকি অংশ ২ ভাগ মাটি ও ১ ভাগ গোবরের মিশ্রণ দিয়ে ভরাট করে স্থায়ী বেড তৈরি করা হয়। অতিরিক্ত পানি, সার পাবার সুষ্ঠু পথ রাখতে হবে।
ট্যাংক পদ্ধতিঃ ছাদে ট্যাংক পদ্ধতিতেও গাছ লাগানো যায়। সেজন্য ছাদে এক ফুট উঁচু ৪টি পিলারের উপর পানির ট্যাংক আকৃতির ৩ ফুট দৈর্ঘ্য, ২ ফুট প্রস্থ ও ১.৫ ফুট উঁচু ৩ ইঞ্চি গাঁথুনির নেট ফিনিশিং ঢালাই দিয়ে যে ট্যাংক তৈরি করা হয়। একেই বলে ট্যাংক বেড পদ্ধতি।
গাছ লাগানোর নিয়মঃ খুব সাবধানতার সাথে টব/পটে/ড্রামে/স্থায়ীবেডে চারা/কলম লাগাতে হবে। ঠিক মাঝখানে পরিমাণ মতো মাটির নিচে রোপন করতে হবে। চারা বা কলমের সাথে লাগানো মাটির বল যেন না ভাঙ্গে সেদিকে নজর রাখতে হবে। চারা বা কলমের ক্ষেত্রে বীজতলা বা নার্সারিতে যতটুকু নিচে বা মাটির সমানে ছিল ততটুকু সমানে ছাদে লাগাতে হবে। বীজতলার থেকে কম বা বেশি গভীরে লাগালে গাছের বাড়বাড়তিতে সমস্যা হতে পারে।
টবের সাইজঃ নতুন বাগান শুরু করার ক্ষেত্রে ইচ্ছা করলে ১২ ইঞ্চি মাটির টব দিয়েই শুরু করা যায় । তবে সব গাছ ১২ ইঞ্চি টবে লাগানো ঠিক হবে না । ১২ ইঞ্চি টবের উপযোগী চারা যেমন – লেবু , ডালিম , কামরাংগা , করমচা , সফেদা , মিশরীয় ডুমুর , চেরী ফল , কমলা, বারমাসী আমড়া ইত্যাদি । ১৬-২০ ইঞ্চি টবের উপযোগী গাছ – থাই মিষ্টি তেতুল , পেয়ারা , জামরুল , আংগুর , বাতাবী লেবু , আম , আতা , অরবরই , আমলকি , মালটা ইত্যাদি । ২০ ইঞ্চি টবের চেয়ে বড় মাটির টব না থাকায় এর চেয়ে বড় সিমেন্টের টব বা হাফ ড্রামের উপযোগী গাছ – যে কোন কূল , জলপাই , কতবেল , বেল , বারমাসী কাঁঠাল , জাম , পেঁপেঁ , কলা ইত্যাদি । উল্লেখ্য যে , উক্ত গাছ গুলি এর চেয়ে ছোট টবে করাও সম্ভব । তবে ভালো ফলাফলের জন্য বড় টব আবশ্যক।
সেচ ব্যবস্থাপনাঃ সেচ বা নিষ্কাশন ছাদ বাগানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা মাটির আর্দ্রতা কমে গেলে যেমন সহজেই গাছপালা নেতিয়ে যাবে তেমনি অতিরিক্ত পানি বা আর্দ্রতার জন্যও গাছ নেতিয়ে পড়ে মরে যেতে পারে। এ জন্য গাছের গোড়া শুকালেই কেবল পানি দেয়া যাবে, গোড়া ভেজা থাকলে কোনো মতেই তাতে পানি দেওয়া যাবে না। কিছু গাছ বেশি পানি গ্রহণ করে (ড্রাগন, নারিকেল) অনেক গাছে পানি কম লাগে (শিম, মরিচ, বেগুন)। তাই ছাদ বাগানে প্রতিনিয়ত অবশ্যই সেচের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ছাদ বাগানে প্লাস্টিকের চিকন পাইপ বা ঝাঁঝরি দিয়ে সেচ দেওয়ায় উত্তম। সেচ অবশ্যই সকাল বেলা দিতে হবে।
ছাদ বাগানের পরিচর্যাঃ
গাছের ডাল-পালা ছাঁটাইঃ ছাদ বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেজন্য পুরাতন রোগাক্রান্ত, বয়স্ক ডালপালা, পাতা সাবধানতার সাথে কেটে নির্দিষ্ট স্থানে জমা করতে হবে। এতে গাছপালা রোগমুক্ত থাকবে এবং গাছের বৃদ্ধি ও ফলন ভালো হবে। কুল গাছের ক্ষেত্রে কুল খাওয়ার পর ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি গাছের সমস্ত ডাল কেঁটে দিতে হবে। তাছাড়াও মরা ও রোগাক্রান্ত ডাল গুলো কেটে বোর্দ পেষ্ট লাগাতে হবে।
গাছে খুঁটি ও টবের মাটি আলগা ও মালচিং : উন্নত কাঙিক্ষত জাতের কলম করা গাছ রোপণ করে গাছে কাঠি বা খুঁটি দিয়ে সোজা করে রাখতে হবে। তাতে গাছের হেলে পড়া বা নড়ে গিয়ে দুর্বল হওয়া রোধ হবে।১৫-২০ দিন পর পর নিড়ানি দিয়ে ওপরের স্তর ভেঙে দিতে হবে। ফলে আগাছা দমন করা যাবে ও ভেতরে বায়ু চলাচলে সুবিধা হবে। খরা মৌসুমে দীর্ঘমেয়াদি বড় গাছের গোড়ার চার ধারে শুকনা কচুরিপানা বা খড়কুটা, শুকনো পাতা দিয়ে মালচিং দেওয়া হলে রস সংরক্ষিত থাকবে, ঘাস গজানো রোধ হবে এবং পরে এগুলো পচে সার হিসেবে কাজে লাগবে।
টব বা ড্রামের মাটি পরিবর্তনঃ এ বিষয়টিও ছাদ বাগানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সাধারণত বর্ষার শেষে কাজটি করতে পারলে ভাল । পূর্বেই কিছু বেলে দো-আঁশ অথবা দো-আঁশ মাটির দুই ভাগের সাথে একভাগ গোবর মিশাতে হবে । যে কয়টি টবের মাটি পরিবর্তন করতে হবে প্রতিটি টবের জন্য আনুমানিক ৪০ গ্রাম টিএসপি, ৪০ গ্রাম পটাশ , ১০০ গ্রাম হাড়ের গুঁড়া ১০ গ্রাম হারে সরিষার খৈল একত্রে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে পানি দিয়ে ১০-১২ দিন রেখে দিতে হবে। অতঃপর যে টবের মাটি পরিবর্তন করতে হবে সেই গাছের টবের গাঁ ঘেঁষে ২ ইঞ্চি প্রস্থে এবং ৬-৮ ইঞ্চি গভীর করে মাটি ফেলে দিতে হবে । এটি ১৬-২০ ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পুরাতন মাটি সরানোর পর ঐ স্থানটি পূর্বেই প্রস্তুতকৃত মাটি দিয়ে ভরে দিতে হবে ।
গাছের সঠিক অবস্থান: কোন কোন গাছ বেশি রোদ পছন্দ করে (কাগজি লেবু, ড্রাগন ফল) কোন গাছ আধা ছায়ায় ভালো হয় (এলাচি লেবু, জামরুল), আবার কোনো গাছ ছায়া পছন্দ করে (লটকন, রামবুটান)। এজন্য ছাদ বাগান থেকে বেশি সুফল পেতে ছাদে রোদের/আলো-বাতাস প্রাপ্তি অবস্থা বুঝে গাছের অবস্থান চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।
সার প্রয়োগঃ ফল গাছে বছরে অন্তত ২ বার সার দিতে হবে, যেমন- বর্ষার আগে ও বর্ষার পরে। মাছ, মাংস ও তরকারি ধোয়া পানি গাছে ব্যবহার করলে গাছের খাবারের অভাব কিছুটা পূরণ হয়। এছাড়াও মিশ্র সার, হাড়ের গুড়া এবং অনুখাদ্য (দস্তা, বোরন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ) বছরে একবার প্রয়োগ করা ভালো। মাছের কাঁটা, হাড়ের টুকরা, ডিমের খোসা, তরিতরকারির পরিত্যক্ত অংশ, পাতা, একটা ড্রামে পঁচিয়ে নিয়ে ছাদ বাগানে ব্যবহার করা ভালো। এছাড়াও ট্রাইকোডারমা, কেঁচো সার, কুইক কম্পোস্ট, ও বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য জৈব সার ছাদ বাগানে ব্যবহার করাই উত্তম। অপেক্ষাকৃত ছোট টব থেকে বড় টবে গাছ অপসারণ করার মাধ্যমে গাছকে স্বাস্থ্যবান করা যায়। ফুল-ফল ঝরা রোধে ও ফল ধরা বাড়াতে নানা প্রকার অনুখাদ্য/হরমোন (সিলভামিক্স, লিটোসেন, ফ্লোরা প্রয়োগ করা যেতে পারে।
পোকা ও মাকড় দমন : প্রাথমিক অবস্থায় শুরুতে সীমিত সংখ্যক পোকা বা তার ডিমের গুচ্ছ দেখা যায়। নিয়মিত ছাদ বাগান পরীক্ষা করে দেখা মাত্র পোকা বা পোকার ডিমগুলো সংগ্রহ করে মেরে ফেলা ভালো। পাতার নিচে ভাগে পোকামাকড় অবস্থান করে। অনেক ক্ষেত্রে বয়স্ক পাতায় পোকামাকড় বেশি দিন আশ্রয় নেয়। এ জন্য পাতা হলুদ হওয়া মাত্র পাতার বোটা রেখে তা ছেঁটে দিতে হয়। অতি ঝাল ২-৩ গ্রাম মরিচের গুড়া এক লিটার পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন ছেঁকে নিয়ে তাতে ২ গ্রাম ডিটারজেন্ট পাউডার ও এক চা চামচ পিয়াজের রস একত্রে মিশিয়ে ৮-১০ দিনের ব্যবধানে স্প্রে করলে জৈব পদ্ধতি অবলম্বনে গাছকে পোকার হাত থেকে নিরাপদ রাখা যায়। মাইট বা ক্ষুদ্র মাকড় খালি চোখে দেখা যায় না। লিচু, মরিচ, বেগুন, গাঁদা ফুলে মাইটের উপদ্রব বেশি দেখা যায়। মরিচের গুড়া পদ্ধতিতেও এ মাকড় দমন করা যায়। যেহেতু পোকামাকড়ের অবস্থান পাতার নিচে এ জন্য এ অংশ ভালোভাবে স্প্রে করে পোকা দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ছাদ বাগানে কীটনাশক ব্যবহার না করাই ভালো। তবে যদি কীটনাশক ব্যবহার করতেই হয় তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন তার টকসিসিটি কম সময় থাকে (ডেকামেথ্রিন দলীয় পারে তবে ইমিডাক্লোরোপ্রিড দলীয় নয়)।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!