রসুনের পোকামাকড় ও রোগবালাই এর লক্ষণ ও প্রতিকার
রসুনের পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনাঃ
রসুনের পোকামাকড়ঃ
রসুনের থ্রিপসের লক্ষণঃ
- এই পোকা পাতার রস চুষে খায় বলেই পাতায় প্রথমে সাদা লম্বাটে দাগ দেখা যায়।
- পরে পাতার অগ্রভাগ বাদামী হয়ে শুকিয়ে যায়।
- রাইজোম আকারে ছোট ও বিকৃত হয়।
প্রতিকারঃ
- এই পোকা দমনে হাতজাল ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা যাবে।
- সাবানের গুড়া প্রতি লিটার পানিতে ৩-৫ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করা যাবে।
- আক্রমণ বেশি হলে ডায়মেথোয়েট ২ মিলি বা ম্যালাথিয়ন/ সুমিথিয়ন ২মিলি অথবা মিপসিন/সপসিন ২ গ্রাম বা এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি / লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
রসুনের লেদা পোকার লক্ষণঃ
- ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে কীড়া বড় হতে থাকে।
- কীড়া পাতা ও কচি পাতা খাওয়ার ফলে পাতা জালের মতো হয়ে যায় এবং পাতায় অনেক কীড়া দেখতে পাওয়া যায়।
প্রতিকারঃ
- গাছ থেকে কীড়াসহ পাতা ছিড়ে নিয়ে পা দিয়ে পিষে পোকা মেরে ফেলতে হবে।
- ফেরোমন ফাঁদ জৈব বালাইনাশক ও ব্যবহার করতে হবে।
- আক্রমণর পরিমাণ বেশি হলে স্পর্শ বিষ যেমন সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক ( রেলোথ্রিন বা রিপকট বা কট বা সপারথ্রিন -১০ ইসি বা সিমবুশ -১০ ইসি ) ১ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
রসুনের পাতা মোড়ানো পোকার লক্ষণঃ
- এই পোকা কীড়া অবস্থায় পাতার সবুজ অংশ খায় এবং পাতা মোড়িয়ে ফেলে।
- এই পোকা সাধারণত রসুনের চারা বাড়ন্ত অবস্থায় কচি পাতায় আক্রমণ করে থাকে।
প্রতিকারঃ
- আক্রন্ত পাতা সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
- পোকার আক্রমণ বেশি হলে সুমিথিয়ন বা ফলিথিয়ন ২ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
রোগবালাইঃ
রসুনের পার্পল ব্লচ রোগের লক্ষণঃ
- এই রোগের আক্রমণে পাতায় ও বীজকান্ডে প্রথমে ছোট ছোট পানি ভেজা তামাটে, বাদামি বা হালকা বেগুনি রঙের দাগ দেখা যায়।
- আক্রান্ত পাতা উপর থেকে মরে যায় এবং পরবর্তীতে পাতা / গাছ ভেঙ্গে যায়।
প্রতিকারঃ
- আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
- আক্রমণ বেশি হলে ইপ্রোডিয়ন জাতীয় ( রোভরাল/ ইভারাল/ রোভানন) ২গ্রাম/লিটার / কার্বেন্ডাজিম/মেনকোজেব/মেটালেক্সিল /টেবুকোনাজল/ট্রাইসাইক্লাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক ২ গ্রাম/লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
রসুনের আগা মরা বা লিফ ব্লাইট রোগের লক্ষণঃ
- পাতার আগায় প্রথমে পানি ভেজা সাদা, বাদামি বা কালচে দাগ দেখা যায়।
- ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে এবং আগা মরে শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়।
- পাতা উপর থেকে নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিকারঃ
- আক্রান্ত গাছের অংশ নষ্ট করে ফেলতে হবে।
- ইপ্রোডিয়ন বা মেনকোজেব+ মেটালোক্সিল জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন: রোভরাল/ ইভারাল/ রোভানন বা রিডোমিল গোল্ড ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
রসুনের কাণ্ড বা গোড়া পচা রোগের লক্ষণঃ
- কন্দ ও শিকড়ে এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়।
- আক্রন্ত কন্দের গোড়ায় ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং পরে তা পচে যায়।
প্রতিকারঃ
- আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
- আক্রান্ত জমিতে প্রতি বছর পেঁয়াজ /রসুন চাষ করা যাবে না।
- কন্দ অটোস্টিন দিয়ে শোধন করে নিতে হবে।
- ম্যানকোজেব (ডাইথেন এম/ ইণ্ডোফিল এম-৪৫) বা অটোস্টিন (কার্ববোন্ডাজিম) ২ গ্রাম/লিটার পানি অথবা কপার অক্সিক্লোরাইড ( কুপ্রাভিট, সানভিট) জাতীয় ছত্রাকনাশক ৪ গ্রাম / লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!