সাউ ইয়েলো চেরি টমেটো’ (গোল্ডেন পূর্ণা) উচ্চ ফলনশীল চেরি টমেটোর জাত।
সাউ ইয়েলো চেরি টমেটো’ (গোল্ডেন পূর্ণা) দেশীয় আবহাওয়ায় উপযোগী উচ্চ ফলনশীল হলুদ চেরি টমেটোর একটি নতুন জাত যা অভিযোজন করতে সক্ষম হয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক।
জাতটি জাতীয় বীজ বোর্ড, কৃষি মন্ত্রণালয় কতৃক অনুমোদন পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জাতটির নাম রাখা হয়েছে- ‘সাউ ইয়েলো চেরি টমেটো’ (গোল্ডেন পূর্ণা)। দেশে টমেটোর এই জাত চাষে দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
শেকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড.এএফএম জামাল উদ্দিনের তত্বাবধানে এই জাত নিয়ে গবেষণা করেছেন স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাকিবুজ্জামান মনি এবং ভারত থেকে শেকৃবিতে মাস্টার্স করতে আসা রাহুল শেখ।
জাপান থেকে আনা চেরি টমেটোর বীজ নিয়ে ২০১৪ সালে দেশীয় আবহাওয়ায় অভিযোজন করাতে গবেষণা শুরু করেছিলেন ড. জামাল উদ্দিন। দীর্ঘ পাঁচ বছর গবেষণা করে তারা জাতটিকে দেশীয় আবহাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হন। জাতটি সারাদেশে চাষ করা যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
এ বিষয়ে গবেষক ড. এ এফ এম জামাল উদ্দিন বলেছেন, সাধারণত একটি টমেটো গাছের স্থায়িত্ব ৩-৪ মাস হয়ে থাকে। তবে এই চেরি টমেটো গাছের স্থায়িত্বকাল ৫-৬ মাস। ফলে প্রায় ২ মাস ফলন বেশি পাওয়া যাবে। এতে চাষীরা লাভবান হবে। এটি হাইব্রিড জাত না হওয়ায় কৃষকরা সহজেই বীজ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করতে পারবে। নিজেরাই বীজ থেকে চারা করতে পারবে।
গাছের বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি জানান, যেখানে একটি গাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর একবারে টমেটো সংগ্রহ করা হয়, সেখানে এই চেরি টমেটোর গাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে টমেটো সংগ্রহ করে কৃষক বাজারে বিক্রি করতে পারবে। গাছ বড় হতে থাকবে আর ফলন দিতে থাকবে। হলুদ রঙের টমেটো সহজেই সবাইকে আকৃষ্ট করবে। এছাড়া এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এ টমেটোতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড যা চোখের জন্য উপকারী।
তিনি ফলন সম্পর্কে আরো বলেন,সাধারণত একটি টমেটো গাছ থেকে ৩- ৪ কেজি টমেটো পাওয়া যায়। এই জাতের গাছ থেকে ৭-৮ কেজি টমেটো পাওয়া যাবে। হেক্টর প্রতি ফলন পাওয়া যাবে প্রায় ১৬০ টন যা অন্যান্য জাতের তুলনায় দ্বিগুণ। একটি গাছ থেকে ৭-৮ টি শাখা বের হয়ে থাকে। যেখানে একটি থোকায় প্রায় ২৪০-২৬০ টি টমেটো ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হবে ৫-৬ গ্রাম। ফল গোল হলুদ বর্ণের হবে। চারা ট্রান্সপ্লান্টের ৩০-৩২ দিনেই ফুল আসতে শুরু করবে।
চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, দেশীয় টমেটোর মতোই এর চাষ পদ্ধতি। এটি বাসার ছাদে সহজেই চাষ করা যাবে। গাছ দুই মিটারের বেশি লম্বা হয়। জৈব সার বেশি দিলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. এ এফ এম জামাল উদ্দিন বলেন, জাতটি কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে আগামী বছরেই ফ্রীতে বীজ বিতরণ শুরু করব। তবে জাতটি জনপ্রিয় করতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। তাহলে দ্রুত মাঠ পর্যায়ে পৌঁছবে।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!