সানতৈল দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার পরিচিত ফল যা এখন বাংলাদশে
সানতৈল ফলের চাষ এখন বাংলাদেশে শুরু হয়েছে। যা দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার পরিচিত ফল। সানতৈল ফলের উৎপত্তি স্থান মরিশাস। সানতৈল ভারত, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, মরিশাস, কম্পুচিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই, ফিলিপিন ইত্যাদি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। সীমিত আকারে এই ফল এখন বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে।
সানতৈল গাছে ফল ধরতে দেখা গেছে হর্টিকালচার সেন্টার, কল্যাণপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খামারে। সানতৈল গাছ প্রায় ৩০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে কলমের গাছ একটু খাটো হয়। শুষ্ক মৌসুমে পাতা লাল হয়ে ঝরে পড়ে। এই গাছের ফুল ছোট এবং হালকা সুগন্ধযুক্ত।
জলবায়ুঃ উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুসম্পন্ন অঞ্চল সানতৈল চাষের জন্য উপযুক্ত। এই ফল বাংলাদেশের আবহওয়ার জন্যও বেশ উপযোগী। সমতল ও পাহাড়ি, দুই জায়গাতেই হয়। এই ফলের গাছ ঠাণ্ডা খুব একটা সইতে পারে না। গরম, বৃষ্টিপাত ও যেসব দেশে শুষ্ক শীতকালের পর আগাম বসন্ত আসে সেসব দেশে সানতৈল ভালো হয়।
মাটিঃ মাটি যত উর্বর হবে সানতৈল গাছও তত ভালো হবে। দো-আঁশ মাটি উত্তম। যেসব মাটির অম্লমান ৭ এর নিচে বা কাছাকাছি সেসব মাটিতে সানতৈল ভালো হয়। পিএইচ বা অম্লমান ৭ এর উপরে গেলে গাছ লৌহের ঘাটতিতে ভোগে। যে মাটিতে পানি দাঁড়ায় না সেরূপ মাটি সানতৈল গাছ লাগানোর জন্য বেছে নিতে হবে।
ব্যবহারঃ সানতৈলের শাঁস সিরাপ হিসেবে সংরণ করা যায়, জ্যাম তৈরি করা যায়। এ হিসেবে শানতোল ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পও গড়ে উঠতে পারে।
জাতঃ এ দেশে সানতৈলের কোনো জাত নেই। তাই বলে বিশ্বে সব দেশের সানতৈল কিন্তু এক রকম নয়। গাছের আকার আকৃতি, ফলের আকার আকৃতি, রঙ, স্বাদ, গন্ধ ইত্যাদির মধ্যে বেশ পার্থক্য দেখা যায়।
চারা কলম তৈরিঃ বীজ থেকে সানতৈলের চারা হয়। তবে কলমের চারা ভালো ফল দেয়। দাবা কলম বা গুটি কলম করা সবচে সহজ। এছাড়া জোড় কলম, ভিনিয়ার জোড় কলম, টি বাডিং ইত্যাদি পদ্ধতিতে সানতৈলের কলম করা যায়।
চাষাবাদঃ মে-জুন মাস সানতৈলের চারা কলম লাগানোর সময়। সবদিকে ১ মিটার মাপে গর্ত তৈরি করে সে গর্তের মাটির সাথে সম পরিমাণ বা ২০ কেজি গোবর সার মিশিয়ে গর্ত ভরতে হবে। সে গর্তের মাঝখানে চারা কলম লাগিয়ে তা বাঁচানোর জন্য যত্ন নিতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে বা খরার সময় সেচ দিলে ভালো হয়। প্রতি বছর গাছের গোড়ার মাটি হালকা করে কুপিয়ে গাছপ্রতি ১০-২০ কেজি গোবর সার, ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০-১৫০ গ্রাম এমপি সার বর্ষার আগে বা পরে দিলে ভালো হয়। শুধু গোবর সার দিলেও চলে।
ফসল সংগ্রহঃ ফল পাকতে শুরু করলে ফলের রঙ হালকা হয়ে আসে। পাকা ফল গাছ থেকে ঝরে পড়ে। তাই পরিপূর্ণভাবে পাকার আগেই পুষ্ট ফল সংগ্রহ বা গাছ থেকে পাড়তে হবে। ফল পাড়ার পর ঘরে বা দোকানে ৭ দিন পর্যন্ত রাখা যায়।
সম্ভাবনাঃ সানতৈল ফলের আলাদা একটা সুগন্ধ আছে, যা প্রথমেই যে কোনো ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে পারে। তাই এ ফলটির বাজার ভালো পাওয়া যেতে পারে এবং বিদেশে রপ্তানিও করা যেতে পারে।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!