সয়া প্রোটিনের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
সয়া প্রোটিন হলো সয়াবিন থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন। সয়া প্রোটিন ২১ শতকের অভিনব আবিস্কার। ‘সয়া প্রোটিন’ হচ্ছে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে প্রস্তুতকৃত সুষম খাদ্য যাতে রয়েছে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক প্রোটিন, অতি অল্প পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, নিত্য প্রয়োজনীয় মিনারেলস, বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ও ফাইবার।
খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম সয়াবিনে রয়েছে খাদ্যশক্তি ৪৩৬ কিলোক্যালরি, আমিষ বা প্রোটিন ৪৩ গ্রাম, তেল ২০ গ্রাম, শর্করা ৩৩ গ্রাম, আঁশ ৩.৭ গ্রাম, খনিজদ্রব্য ৪.৬ গ্রাম। এছাড়া যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, থিয়ামিন ও রাইবোফ্লাভিন রয়েছে। উন্নত মানের সয়াবিন থেকে আমরা ৪২-৪৪ ভাগ প্রোটিন পেয়ে থাকি, যা অন্যান্য তৈলবীজ (যেমন-সরিষা, চীনাবাদাম, তিল সূর্যমুখী, তিসি ইত্যাদি) হতে প্রাপ্ত প্রোটিনের দ্বিগুণ। সয়াবিন থেকে উৎপাদিত দুধ পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
সয়া প্রোটিন অনেকভাবেই ব্যবহার হয়ে থাকে। পুষ্টিমানের দিক থেকে এ প্রোটিন প্রাণীজ প্রোটিনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। সয়া প্রোটিন ম্যাক্রো পুষ্টি ও মাইক্রো পুষ্টির একটি উন্নত উৎস। সয়া প্রোটিন দিয়ে খুব ভালো মানের দুগ্ধজাতীয় খাদ্যের বিকল্প খাদ্য তৈরি করা যায়। আমাদের দেশে যেখানে মায়েদের অপুষ্টির কারণে প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মায় (২.৫ কেজি), সেখানে বিভিন্ন খাদ্যে সয়া প্রোটিন ব্যবহারের মাধ্যমে অপুষ্টি দূর করা সম্ভব।
সয়া প্রোটিনের নিয়মিত ব্যবহারে অনেক রোগ প্রতিরোধ হয়। যেমন, সয়া প্রোটিন উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। রক্তে এলডিএল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমানো ও এইচডিএলের মাত্রা বাড়ানোর ক্ষমতা থাকায় কোলস্টেরল বৃদ্ধিজনিত হৃদরোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। নিশ্চিত ও নিরাপদ ভাবে দেহের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। দেহের বাড়তি চর্বি / কোলেষ্টেরল ( LDL /VLDL ) দ্রুত কমিয়ে আনে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্ষমতা থাকায় আইসোলেটেড সয়া প্রোটিন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ থেকে রক্ষা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সয়া প্রোটিন বেশকিছু টিউমার /ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। আইসোলেটেড সয়া প্রোটিন সরাসরি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা য়ায় না। এই প্রোটিন প্রচলিত খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে খাদ্যের মানকে উন্নত করা হয়। প্রচলিত আটার সঙ্গে সয়া আটা মিশিয়ে আটার পুষ্টিমান বাড়ানো হয়। সয়াসমৃদ্ধ আটা দিয়ে রুটি, বিস্কুট, কেক ইত্যাদি প্রস্তুত করা হয়। ভাত/ রুটি জাতীয় খাদ্যের চেয়ে সয়া প্রোটিনে প্রায় ১৫ গুণ আয়রন, ক্যালসিয়াম, খনিজ জাতীয় পদার্থ বিদ্যমান রয়েছে।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!