তেজপাতা চাষ পদ্ধতি ও গুনাগুণ। তেজপাতার সম্ভাবনা
তেজপাতা (Bay leaf) Lauraceae গোত্রের এক প্রকার মসলা জাতীয় উদ্ভিদ,যার পাতা রান্নায় মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেজপাতার বৈজ্ঞানিক নাম হলো Cinnamomum tamala । সারা দেশে কম-বেশি তেজপাতা গাছ হলেও সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বেশি হয়ে থাকে।
তেজপাতার গুনাগুণঃ তেজপাতা মস্তিস্ক, হৃদযন্ত্র ও যকৃতের শক্তিবর্ধক, প্রফুল্লতা আনয়নকারক, পাকস্থলী ও অন্ত্রের ব্যথানিবারক, ও পুষ্টিকারক হিসেবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
জলবায়ুঃ প্রায় সব ধরনের মাটি ও আবহাওয়ায় তেজপাতা জন্মাতে পারে। তবে সুনিষ্কাশিত গভীর বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি তেজপাতা চাষের জন্য আদর্শ। সেক্ষেত্রে জমির প্রকৃতি অবশ্যই উঁচু হতে হবে। তেজপাতা একটানা অনেক দিন খরা সহ্য করতে পারে না।
চারার পরিমাণঃ একর প্রতি ৩০০টি চারা লাগাতে হয়।
চারা বোনার সময়ঃ বৈশাখ-আষাঢ় মাস তেজপাতা চারা বপনের উপযুক্ত সময়।
চারা রোপন ( Planting )ঃবিকেলের দিকে সতেজ ও পুষ্ট চারা লাগাতে হবে। মাদার দূরত্ব-৬ মিটার, মাদার চওড়া ও গভীরতা- ৬০ সেমি। চারা লাগানোর পর গোড়ার মাটি অল্প চেপে দিতে হবে। কোন চারা মরে গেলে সেই জায়গায় নতুন চারা লাগিয়ে দিতে হবে।
সার প্রয়োগ ( Manuring)ঃ প্রতি বছর গাছ প্রতি গোবর ৫০ কেজি, ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম, টিএসপি ১৫০ গ্রাম, এমপি ১০০ গ্রাম দিতে হবে। রোপনের সময় প্রতি মাদায় ১০ কেজি ছাই ও ১০০ গ্রাম টিএসপি দিতে হবে।
ফসল তোলাঃ চারা লাগানোর ৪/৫ বছর পর থেকে প্রত্যক শীতকালে পাতা সংগ্রহ করা যায় এবং ১টি গাছ থেকে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত পাতা সংগ্রহ করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যবান ও কম বয়সী গাছ থেকে প্রত্যেক বছর পাতা সংগ্রহ করা গেলেও রুগ্ন ও বেশি বসয়ী গাছ থেকে ১ বছর অন্তর পাতা সংগ্রহ করা উচিত। বৃষ্টিতে পাতার সুগন্ধ নষ্ট হয়ে যায় বিধায় অক্টোবর-মার্চ মাস পর্যন্ত পাতা সংগ্রহ করা হয়ে থাক। গাছ থেকে পাতা তোলার পর ৫-৭ দিন ছায়াতে শুকিয়ে নিয়ে বিক্রয়ের জন্য বস্তায় ভরা হয়।
ফলনঃ প্রতি একরে ৩০০-৪০০ কেজি শুকনা পাতা অথবা ২০-২৫ কেজি তৈল পাওয়া যায়।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!