About Us Contact Us Privacy Policy Terms & Conditions Copyright

কাঁঠাল (Jackfruit) উৎপাদন পদ্ধতি। রোগ ও পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা

Please don't forget to share this article

কাঁঠাল (Jackfruit) একটি মৌসুমী ফল। কাঁঠালের বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus. পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জাতের কাঁঠাল পাওয়া যায়। তন্মধ্যে চাউলা, গিলা, খাজা ইত্যাদি অন্যতম। আমাদের দেশের নিচু অঞ্চলগুলোতে কাঁঠাল উৎপাদন কম হয়। গছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে গাছ মরে যায়। তাই নিচু এলাকায় কাঁঠাল কম হয়। সুতরাং কাঁঠাল গাছের চারা উচু জায়গায় লাগতে হবে যেন সেখানে পানি না উঠে এবং পানি জমে না থাকে।

পুষ্টি মূল্য এবং ভেষজ গুণ: আমিষ ও ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। কাঁঠালের শাঁস ও বীজকে চীন দেশে বলবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাঁঠালের শিকড়ের রস জ্বর ও পাতলা পায়খানা নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।

উপযুক্ত জমি ও মাটি:পানি দাঁড়ায় না এমন উঁচু ও মাঝারি সুনিষ্কাষিত উর্বর জমি কাঁঠালের জন্য উপযোগি।

জাত পরিচিতি: কাঁঠালের কোনো অনুমোদিত জাত নেই। তবে তিন ধরণের কাঁঠাল চাষ হয়-খাজা, আদারসা ও গালা।

চারা তৈরি: সাধারণত কাঁঠালের বীজ থেকেই চারা তৈরি করা হয়। ভালো পাকা কাঁঠাল থেকে পুষ্ট বড় বীজ বের করে ছাই মাকিয়ে ২/৩ দিন ছায়ায় শুকিয়ে বীজতলায় বপন করলে ২০-২৫ দিনে চারা গজাবে। জ্জ মাসের চারা সতর্কতার সাথে তুলে মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। এছাড়া গুটি কলম, ডাল কলম, চোখ কলম, চারা কলম এর মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়।

চারা রোপণ: ষড়ভূজী পদ্ধতিতে সুস’, সবল ও রোগমুক্ত চারা বা কলম মধ্য জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য শ্রাবণ মাসে রোপণ করতে হয়। গাছ ও লাইনের দূরত্ব ১২ মিটার করে রাখা দরকার।

সার ব্যবস্থাপনা: রোপণের সময় প্রতি গর্তে গোবর ৩৫ কেজি, টিএসপি সার ২১০ গ্রাম, এমওপি সার ২১০ গ্রাম সার প্রয়োগ করতে হয়। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রতি গাছের জন্র সারের পরিমান বৃদ্ধি করা দরকার।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা: চারা/ কলমের তাড়াতাড়ি বাড়বাড়তি হওয়ার জন্য পরিমিত ও সময় মতো সেচ প্রদান করা দরকার।

রোগ ও পোকা মাকড় দমন ব্যবস্থাপনা:

কাঁঠাল পচা রোগ: এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয। এ রোগের আক্রমণে কচ  ফলের গায়ে বাদমি রঙের দাগের সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত ফল গাছ থেকে ঝড়ে পড়ে।

প্রতিকার: গাছের নিচে ঝড়ে পড়া পাতা ও ফল পুড়ে ফেলতে হয়। ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক (ডায়থেন এম-৪৫/ইন্ডোফিল এম-৪ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে) অথবা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন-নোইন, এমকোজিম) ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার পর থেকে ১৫ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

কাঁঠালের মুচিঝরা রোগ: ছত্রাকের আক্রমণের কারণে ছোট অবস্থাতেই কালো হয়ে ঝড়ে পড়ে।

প্রতিকার: ডাইথেন এম ৪৫ অথবা রিডোমিল এম জেড ৭৫, প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম করে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। সুষম সার ব্যবহার করতে হবে।

কাঠালের ফলছিদ্রকারী পোকাঃ

লক্ষণঃ

  • কুঁড়ি, বিটপ, কান্ড,মাটির উপরে মুল প্রভৃতি স্থানে এ পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়। পোকার কীড়া এসবের মধ্যে প্রবেশ করে কলাসুমুহ খেয়ে নষ্ট করে ফেলে।
  • এ পোকার আক্রমণে ফলে ছিদ্র, ছিদ্রে পোকার মল ও কালো দাগ দেখা যায় ।
  • এ পোকার কীড়া ফল ছিদ্র করে ভিতরে প্রবেশ করে খেয়ে নষ্ট করে।
  • আক্রান্ত স্থানে পানি ভেজা দাগ দেখা যায় ও পচন শুরু হয়।
  • আক্রান্ত ফল কালো হয়ে কুঁচকে যায় এবং ঝরে পড়ে।

দমন ব্যবস্থাপনাঃ

  • আক্রান্ত মন্জুরি ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলা।
  • ফল বেশি ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।
  • ছিদ্র দিয়ে বড় সুচ বা লোহার রড ঢুকিয়ে পোকা মেরে ফেলা এবং কাদা বা মোম দিয়ে গর্তের মুখ বন্দ্ব করে দিতে হবে।
  • কচি ফলগুলো ছিদ্রযুক্ত পলি ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
  • সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ২ মিলি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে অথবা ডায়াজিনন ৫০ ইসি বা ম্যালাথিয়ন-৫৭ ইসি ০.২ % হারে পানিতে মিশইয়ে প্রয়োগ করলে এ রোগ দমন করা সম্ভব।

ফসল তোলা: ফল পাকতে ১২০-১৫০ দিন সময় লাগে। সাধারণত জ্যৈষ্ঠ- আষাঢ় মাসে কাঁঠাল সংগ্রহ করা হয়।

বিঃদ্রঃ ফল গাছে স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই ফল খাবেন না বা বিক্রি করবেন না।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.agriculturelearning.com কর্তৃক সংরক্ষিত