এআইপি সম্মাননা পেলেন ১৩ জন । কৃষি পেশার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি
এআইপি সম্মাননা প্রবর্তন কৃষিখাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কৃষকদের সম্মান জানানোর জন্য এটি একটি নতুন উদাহরণ এবং এর ফলে কৃষি পেশার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।
২৭ জুলাই, ২০২২ খ্রিঃ, বুধবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা প্রদানকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কৃষি মন্ত্রী মহোদয় এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, AIP ( Agricultural Important Person )সম্মাননা দিয়ে আমরা কৃষকসহ কৃষির সাথে সম্পৃক্তদেরকে সম্মানিত করেছি, নিজেকে সম্মানিত করেছি এবং সেই সাথে জাতিকেও সম্মানিত করেছি।
আগামী দিনের কৃষিকে আমরা বাণিজ্যিক ও সম্মানজনক পেশা হিসাবে উন্নীত করতে চাই। কৃষিতে শিক্ষিত, মেধাবী ও সৃজনশীল তরুণদের আকৃষ্ট করতে চাই। এ সম্মাননা এক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ সরকার দেশে কৃষির সাফল্যের অন্যতম কারিগর কৃষক, কৃষি বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, খামারিসহ কৃষির সাথে সম্পৃক্তদেরকে প্রতি বৎসর সম্মাননা জানাতে ও তাদেরকে উৎসাহিত করতে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) সম্মাননা প্রদানের জন্য ২০১৯ সালে এআইপি নীতিমালা প্রণয়ন করে।
এআইপি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি বছর মোট ৫টি বিভাগে সর্বোচ্চ ৪৫ জনকে এআইপি সম্মাননা প্রদান করা হবে। এআইপি কার্ডের মেয়াদ থাকবে এক বছর।
২০১৯ সালের এআইপি নীতিমালার আলোকে মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথমবারের মতো ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি)’-২০২০ সম্মাননা পেয়েছেন ১৩জন (২৭ জুলাই, ২০২২) । এআইপি সম্মাননা প্রাপ্তরা সিআইপিদের মতো সুযোগসুবিধা পাবেন।
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বিভাগে এআইপি সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- কৃষি উদ্ভাবন বিভাগে বাউধান-৩ এর জাত উদ্ভাবনের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, দুটি বীজ আলুসহ মোট ১০টি সবজির জাত উদ্ভাবন ও বাজারজাতকরণে এ আর মালিক সিডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউস সোপান মালিক, মেহগনি ফলের বীজ থেকে তেল তৈরির জন্য ফিউচার অর্গানিক ফার্মের সৈয়দ আব্দুল মতিন, আলীম পাওয়ার ট্রিলার উদ্ভাবনের জন্য আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের আলীমুছ ছাদাত চৌধুরী।
কৃষি উৎপাদন বা বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বিভাগে এআইপি সম্মাননা প্রাপ্ত ৬ জন হলেন- নাটোর সদরের দৃষ্টান্ত অ্যাগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নার্সারির মো. সেলিম রেজা, ঠাকুরগাঁওয়ের চামেশ্বরীর মো. মেহেদী আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ঝালকাঠি সদরের এশা ইন্টিগ্রেটেড অ্যাগ্রিকালচার ফার্মের মো. মাহফুজুর রহমান, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের জাগো কেঁচো সার উৎপাদন খামারের মালিক মো. বদরুল হায়দার বেপারী, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার নুর জাহান গার্ডেনের মো. শাহবাজ হোসেন খান এবং কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বিছমিল্লাহ মৎস বীজ উৎপাদন কেন্দ্র ও খামারের মো. সামছুদ্দিন (কালু)।
এআইপি সম্মাননাপ্রাপ্ত বিছমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্র ও খামারের মো. সামছুদ্দিন কালু অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, মাছের ব্যবসা শুরু করার সময় চৌধুরী বংশের আমার এক বন্ধু মানসম্মানের ভয়ে ব্যবসায় আসে নি। আর আজকে আমার মতো একজন মাইচ্ছ্য বা চাড়ালকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এআইপি সম্মানে ভূষিত করেছেন। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এ দেখে পুরো জাতি জাগ্রত হবে।
এআইপি সম্মাননা প্রাপ্ত মোছা. নুরুন্নাহার বেগম অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, কৃষিকাজ করে এতো বড় সম্মান পাওয়া যাবে আমরা কল্পনাও করি নি। আমাকে কেউ ১০ লাখ টাকা দেবে, আমি তা চাই না। কিন্তু এ সম্মাননা অনেক বড় পাওয়া। তিনি বলেন, মাটিকে ঘুষ দেয়া লাগে না। মাটির সাথে পরিশ্রম করলে, মাটি আমাদের সাথে কথা বলে। আমাদের মতো কৃষককে এতো বড় সম্মাননা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
এআইপি সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। এতে সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব মো.সায়েদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
How useful was this post?
Click on a star to rate it!
We are sorry that this post was not useful for you!
Let us improve this post!
Thanks for your feedback!