About Us Contact Us Privacy Policy Terms & Conditions Copyright

আইপিএম পদ্ধতিতে পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনার প্রশ্নোত্তর

Please don't forget to share this article

আইপিএম কি?

আইপিএম বা সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা বলতে পরিবেশকে দুষণমুক্ত রেখে প্রয়োজনে এক বা একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও রোগ বালাইকে অর্থনৈতিক ক্ষতি সীমার নিচে রাখাকে বুঝায়।

আইপিএম এর উপাদান কয়টি এবং কি কি ?

আইপিএম এর পাঁচটি উপাদান, সেগুলো হলোঃ ১। উপকারী পোকামাকড় ও প্রাণী সংরক্ষণ, ২। বালাই সহনশীল জাতের চাষাবাদ, ৩। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির ব্যবহার, ৪। যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি এবং ৫। রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা

উপকারী প্রাণী ও পোকা কোনগুলো? এদের কাজ কি? কিভাবে আমরা উপকারী পোকামাকড়ের সংখ্যা বাড়াতে পারি?

আইপিএম এর উপাদানগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো উপকারী পোকামাকড় ও প্রাণী সংরক্ষণ। ব্যাঙ, চিল, পেঁচা, গুইসাপ, মাকড়সা এগুলো উপকারী প্রাণী। লেডী বার্ড বিটল, ক্যারাবিড বিটল, বোলতা, মিরিড বাগ, ওয়াটার বাগ, ড্যামসেল ফড়িং এসব উপকারী পোকা। এরা জৈবিকভাবে ফসলের ক্ষতিকারক পোকা দমনে যথেষ্ট সাহায্য করে।

উপকারী পোকামাকড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আমদেরকে- ধান ক্ষেতের আইলে শিম ও শসা জাতীয় ফসল চাষ করতে হবে। জমিতে পরিমিত মাত্রায় পানি রাখতে হবে। ফসল কাটার পর আইলে কিছু খরকুটা বিছিয়ে রাখতে হবে। ফসল কাটার অন্তত: ৪/৫ ঘন্টা পর জমিতে চাষ দিতে হবে। জমিতে বাঁশের বুষ্টার স্থাপনের মাধ্যমে বোলতা প্রতিপালন করতে হবে। বালাইনাশকের এলোপাতাড়ি ব্যবহার পরিহার করতে হবে।   

বালাই সহনশীল জাতের চাষাবাদ কেন করব?

আইপিএম এর ২য় উপাদান হলো বালাই সহনশীল জাতের চাষাবাদ। বালাই সহনশীল জাত চাষ করলে ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও রোগের আক্রমণ অনেকটাই কমে যাবে এবং ফলনও বাড়বে। ব্রি ধান ২৭, ২৯, ৩২ এই জাতগুলো বাদামি গাছ ফড়িং, পামরী, সাদা-পিঠ গাছ ফড়িং, টুংরো, ব্লাস্ট, পাতা পোড়া ও কান্ডপচা রোগের আক্রমণ প্রতিরোধী।

আমরা আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির ব্যবহার কেন করব?

আইপিএম এর উপাদানগুলোর মধ্যে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ৩য়। এই পদ্ধতিতে ভালো বীজ বপন, সঠিক দূরত্বে চারা রোপন, সবল চারা, সুষম সার, আগাছা মুক্ত জমি, সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা, সারিতে রোপণ এগুলো সঠিকভাবে করলে অধিক ফলন পাওয়া যাবে এবং অর্থনৈতিকভাবে আপনারা লাভবান হবেন।  

যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি আমরা কিভাবে এবং কেন করব?

আইপিএম এর ৪র্থ উপাদান হলো যান্ত্রিক দমন পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে  আমরা হাত জালের সাহায্যে পোকা ধরে মেরে ফেলব। আলোক ফাঁদে পোকা ধরব। আক্রান্ত পাতার আগা কেটে দিব। পাখি বসার জন্য ডাল পুঁতে দিব। হাত দিয়ে পোকার ডিম সংগ্রহ করে নষ্ট করব । এসব পদ্ধতি ব্যবহারে বালাইকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।  

আই পি এম পদ্ধতিতে আমরা কখন রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা গ্রহণ করব?

আইপিএম পদ্ধতিতে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে কেবল বেশি মাত্রায় আক্রান্ত জমিতে সঠিক বালাইনাশক, সঠিক মাত্রায়, সঠিক পদ্ধতিতে, সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে হবে।

প্রথম ৪টি উপাদানের সাহায্যে যদি ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় ও রোগের আক্রমণ দমিয়ে রাখা সম্ভব না হয়, কেবল তখনই সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে আপনারা বালাইনাশক ব্যবহার করবেন।

আই পিএম পদ্ধতি কৃষক ভাইদের জন্য কতটুকু উপকারী বলে আপনি মনে করেন?

আই পিএম পদ্ধতি গ্রহনের ফলে উপকারী পোকামাকড় ও প্রাণী সংরক্ষণ করা যাবে। বালাইনাশকের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। এতে কৃষক ভাইদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কমবে। বালাইনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার কমলে উৎপাদন খরচ কমে যাবে। এছাড়া, ক্ষতিকারক পোকামাকড় বালাইনাশক সহনশীলতা অর্জন করার সুযোগ পাবে না। সর্বোপরি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে এবং দুষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তাই আমি মনে করি, আইপিএম কৃষক ভাইদের জন্য উপকারী, পরিবেশবান্ধব, অর্থ এবং সময় সাশ্রয়ী পদ্ধতি।

লেখকঃ রেশমা আফরোজ

উপজেলা কৃষি অফিসার ( ৩৫ তম বিসিএস)

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.agriculturelearning.com কর্তৃক সংরক্ষিত