About Us Contact Us Privacy Policy Terms & Conditions Copyright

পেয়ারা গাছে ডাল বাঁকানো পদ্ধতিতে অসময়ে ফল ধারণ ও ফলন বৃদ্ধি

Please don't forget to share this article

পেয়ারা গাছে ডাল বাঁকানো পদ্ধতিতে পেয়ারার ১০ গুণ ফলন বৃদ্ধিঃ

পেয়ারা বাংলাদেশের খুবই জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন একটি ফল। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ এই ফলটি বাংলাদেশের পায় সব জায়গাতেই কম বেশি হয়ে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারার চাষ হয়ে থাকে বরিশাল, ফিরোজপুর, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি প্রভৃতি এলাকায়। পরিচালক, ও প্রফেসর, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং বাউ-জার্মপ্লাজম সেন্টারের পরিচালক ড. এম.এ. রহিম দীর্ঘ ২৭ মাস গবেষণা করার পর পেয়ারা সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। নতুন প্রযুক্তিটি হলো পেয়ারার ডাল বাঁকালেই দশগুণ ফলন বাড়বে। তাছাড়াও একই প্রযুক্তিতে বছরের বার মাসই ফল ধরানো অর্থাৎ অসময়ে পেয়ারা গাছে ফল ধরানো সম্ভব। ফলের মৌসুমে গাছের ফুল ছিড়ে দিয়ে এই প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করা যায়, যার ফলে সারা বছরই ফলের মৌসুমের তুলনায় গাছে কমপক্ষে ৮-১০ ফল ধরবে।

পেয়ারার এই নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে ড. এম. এ. রহিম জানান, সাধারণত বর্ষা ও শীত ঋতুতে গাছে পেয়ারা হয়। কেননা শীত অপেক্ষা বর্ষাকালে ফলন একটু বেশি হয়ে থাকে। শীতকালের পেয়ারা বেশি মিষ্টি হয়ে থাকে। অপরদিকে বর্ষাকালের পেয়ারা কম মিষ্টি হয়। কারণ বর্ষার দিনে বাতাসে জলীয় অংশ বেশি থাকায় ফলের মিষ্টি স্বাদ ও অন্যান্য গুণাগুণ শীতকালের তুলনায় অনেকটাই কমে যায়। বাতাসে জলীয় অংশ বেশি থাকায় পাকা ফল তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায় বিধায় এ সময়ে ফলের দাম কম থাকে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, সব জাতের পেয়ারার গুণাগুণ শীতকালে বেড়ে যায় কিন্তু রোগ ও পোকার আক্রমণ কম থাকে। এ সময় ফলের আকার,আকৃতি এবং রং ভালো হওয়ার দরুন পেয়ারার দামও বেশি থাকে। তাই বর্ষাকাল বাদ দিয়ে অন্যান্য ঋতুতে কী উপায়ে পেয়ার উৎপাদন বাড়ানো যায় তা নিয়ে আরো গবেষণা চলতে থাকে। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে গবেষণার দ্বারা ‘পেয়ারা গাছের ডাল বাঁকানো’ পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি পেয়ারা গাছ থেকে সাধারণ গাছের তুলনায় কম করে হলেও ৮-১০ গুণ বেশি পেয়ারা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে।

এছাড়াও পেয়ারার মৌসুমে গাছের ফুল ও ফল ছিড়ে দিয়ে এই প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করা যায়। বছরে ২ বার অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে এবং হেমন্তকালে শাখা-প্রশাখার নিয়ন্ত্রিত বিন্যাসের মাধ্যমে সারা বছর পেয়ারার ফুল ও ফল ধারণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যে, গাছের বয়স দেড় থেকে দু’বছর হলেই কেবল এই পদ্ধতিটি শুরু করা যাবে এবং পাঁচ থেকে ছয় বছর পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে ফলন বাড়ানো যাবে বলে জানিয়েছেন বাকৃবির জার্মপ্লাজম সেন্টারের প্রধান গবেষণা সহযোগী কৃষিবিদ শামসুল আলম মিঠু।

পেয়ারা গাছের ডাল বাঁকানোর ১০-১৫ দিন আগে গাছের গোড়ায় সার ও পানি দিতে হবে। ডাল বাঁকানোর সময় প্রতিটি শাখার অগ্রভাগের প্রায় এক থেকে দেড় ফুট জায়গার পাতা ও ফুল-ফল রেখে বাকি অংশগুলো ছেটে দিতে হবে। এরপর ডালগুলোকে সুতা দিয়ে বেঁধে তা বাঁকিয়ে মাটির কাছাকাছি খুঁটির মাধ্যমে মাটিতে বেঁধে দিতে হবে। গ্রীষ্মকালে মাত্র ১০-১২ দিন পরেই গাছে নতুন ডাল গজানো শুরু করে। এক্ষেত্রে নতুন ডাল ১ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হলে বাঁধন খুলে দিতে হবে। আর হেমন্তকালে গাছে নতুন ডাল গজাতে ২০-২৫ দিন সময় লাগবে। পরাবর্তীতে ডাল বাঁকানোর ৪৫-৬০ দিন পরে গাছে ফুল ধরা শুরু হবে। পেয়ারা গাছে এভাবে গজানো প্রায় প্রতি পাতার সংযোগস্থলে ফুল আসবে। এই পদ্ধতিতে পেয়ারা গাছে সারা বছরই অর্থাৎ অসময়ে ফল ধরবে। অসময়ে ফল ধরার কারণে ফলের বাজারমূল্যও বেশি পাওয়া যাবে। তাই এই পদ্ধতিটি গাছে অসময়ে ফল ধারণ ও পেয়ারার বেশি ফলন বৃদ্ধির জন্য একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ পদ্ধতি।

 

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

As you found this post useful...

Follow us on social media!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Please don't forget to share this article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব www.agriculturelearning.com কর্তৃক সংরক্ষিত